পুলিশ সুপারের কাছে কেন অভিযোগ করেছিস’ বলেই মারধর।

 প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৮:৩২ অপরাহ্ন   |   জেলার খবর


মনা,বেনাপোল (যশোর)  প্রতিনিধিঃ

 যশোরের শার্শায় একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সন্ত্রাসী তৎপরতার বিষয়ে পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করায় অভিযুক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে এক অভিযোগকারীর হাত-পা ভেঙে দিয়েছে। এ ব্যাপারে শার্শা থানায় নতুন করে আরো একটি অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগ তদন্ত করছেন এসআই বাবলু। এছাড়া অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন নাভারন সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান। 


গত ৩১ আগস্ট এসপির কাছে দেওয়া লিখিত অভিযোগে শার্শা উপজেলার পন্ডিতপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে ওবায়দুর রহমান (৪৫) জানান, শার্শার গোর্কণ এলাকার নিজাম বুড়োর জামাই সিদ্দিক হোসেন, সিদ্দিক হোসেনের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম, হারুন বুড়োর ছেলে মোজাম্মেল ও ডিহির শহিদুল ইসলাম মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত। সিদ্দিক হোসেন মাদক কারবারে লিপ্ত থাকার পাশাপাশি পন্ডিতপুর গ্রামের ওবায়দুল ইসলামের স্ত্রী নাজমা বেগমকে কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। এসব ঘটনায় প্রতিবাদ করায় ২৬ আগস্ট ওবায়দুল ইসলামকে মারপিট করেন সিদ্দিক। এসময় তার স্ত্রী নাজমা বেগম এগিয়ে আসলে তাকেও মারপিট করাসহ শ্লীলতাহা করেন। এই ঘটনায় ওই দিনই থানায় লিখিত অভিযোগ দেন নাজমা বেগম। তদন্তের জন্য গোড়পাড়া ফাঁড়ির ইনচার্জ জহুরুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করে। পুলিশ আসার পর ওই চক্রটি আবার তাদের ওপর হামলা করে। এছাড়া অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। এরপর শহিদুল ইসলাম ডিহির একজনকে দিয়ে হত্যা করে লাশ টুকরো টুকরো করে ফেলার হুমকি দেন। এই অভিযোগটি তদন্তের জন্য পুলিশ সুপার দায়িত্ব দেন নাভারন সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরানকে।


অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওই ঘটনা তদন্তে ওবায়দুর রহমানের পরিবারকে তার অফিসে আসতে বলেন গত ১৭ সেপ্টেম্বর। অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কাছে যাওয়ার সময় ওই দিন সকাল সাড়ে ৯টায় পথে সাড়াতলা বাজারে আনিছুর ডাক্তারের চেম্বারের সামনে পৌঁছালে ডিহির রনির ছেলে শহিদুল এসে ওবায়দুর রহমানের ওপর হামলা চালান। ‘পুলিশ সুপারের কাছে কেন অভিযোগ করেছিস’ বলে তাকে মারপিট করতে থাকেন। এছাড়া লাঠি ও রড দিয়ে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দেন। ওই সময় তার সঙ্গে মারপিটে যোগ দেন পন্ডিত পুকুর গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে ইউনুছ আলী, হারুন বুড়োর ছেলে মোজাম্মেল হোসেন, জামাই সিদ্দিক হোসেন, সিদ্দিক হোসেনের ছেলে সাব্বির হোসেন। এ ঘটনায় চিকিৎসা নেওয়ার পর ২০ সেপ্টেম্বর থানায় উল্লেখিতদের বিরুদ্ধে আরো একটি অভিযোগ করেন ওবায়দুর রহমান। অভিযোগ তদন্ত করছেন এসআই বাবলু। 


ভুক্তভোগী পরিবার অভিযোগ করে বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন স্থানীয় চাপ আছে, থানায় মামলা হবে না, আদালতে গিয়ে মামলা করতে হবে। এ ঘটনায় চরম হতাশা আর উৎকণ্ঠায় রয়েছেন তারা। প্রাণ সংশয়ে রয়েছেন বলেও জানান তারা।


নাভারন সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি তিনি অবগত আছেন। কার্যকরি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি ভুক্তভোগী পরিবারকে তার সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য বলেন।


এ ব্যাপারে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই বাবলু জানিয়েছেন, তিনি তদন্ত করেছেন। অভিযোগের সত্যতাও পেয়েছেন। থানায় অবশ্যই মামলা রের্কড হবে। ডিউটি অফিসারকে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন। আদালতে মামলা করতে বলেছেন ভুক্তভোগী এমন অভিযোগ সত্য নয়।

জেলার খবর এর আরও খবর: