সোনাইমুড়ীতে স্বীকৃতির অভাবে ৭১ সৈনিকদের অসহায়ত্ত্ব জীবন।

মোরশেদ আলম, (নোয়াখালী)সোনাইমুড়ীঃ লাল-সবুজের পতাকা খচিত বিশ্ব-মানচিত্রে সার্বভৌম দেশ অর্জনে পাক-বাহিনী বিরোধী দুঃসাহসী লড়াকু সৈনিক মোঃ শাহ আলম আজও পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। অর্থ কষ্টে চিকিৎসার খরচ চালিয়ে স্বাভাবিক দিনাতিপাত করতে পড়তে হচ্ছে হিমশিমে অবস্থায়।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার দেওটি ইউনিয়নের বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন নগরের মৃতনাদরের জামানের ছেলে মোঃ শাহ আলম বার্ধক্যজনিত কারণে উপার্জনের ক্ষমতা হারিয়ে জীবন সংগ্রামে পরাজিত।
১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে জীবন বাজি রেখে সংগ্রাম করেও আজ রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির হবে রাষ্ট্রীয় সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
সরকার ২০১৭ সালে গেজেট থেকে বাদ পড়া মুক্তিযোদ্ধাদের আবেদন করার সুযোগ করে দেয়। নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা বাছাই করার জন্য অধ্যাপক হানিফের নেতৃত্বে ৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে। কমিটি যাচাই-বাছাই করে ২০২ জনের তালিকা প্রেরণ করে। পরবর্তীতে অনিয়মের অভিযোগে পুনরায় যাচাই-বাছাই করার জন্য সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুর রহমানের নেতৃত্বে ৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের ৪ ও ৫ তারিখে পুনরায় যাচাই-বাছাই করে ৮৩ জনের নাম জামুকায় প্রেরণ করে কমিটি।
তালিকায় মোঃ শাহ আলম ৫২ নং, বজরা ইউনিয়নের বারাহিনগর গ্রামের আবু তাহের ৬৭নং, জয়াগ ইউনিয়নের ভাওরকোট গ্রামের আনোয়ারুল হক ভূঁইয়া ১১নং, নদনা ইউনিয়নের জগজীবনপুর গ্রামের আবুল কালাম চৌধুরী ১৮নং সহ ৮৩ জনের তালিকা এখনো গেজেট আকারে প্রকাশ করেনি সরকার।
গেজেটে তালিকা প্রকাশ না করায় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে স্বাধীনতা সংগ্রামে বিজয়ী এই সৈনিকেরা। জীবনের শেষ সন্ধিক্ষণে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নিয়ে মৃত্যুবরণ করতে পারবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান যোদ্ধাদের। জীবনের শেষ সময় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নিয়ে মরতে চায় তারা। মুক্তি পেতে চান আর্থিক কষ্টের যাঁতাকল থেকে।
উপজেলার বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন নগরের মৃত নাদের জামানের ছেলে শাহ আলম ব্যতীত কণ্ঠে বলেন, হয়তো আর কিছুদিনের মধ্যে মারা যাবো।রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা তো দূরের কথা পাইনি এখনো স্বীকৃতি।
বজরা ইউনিয়নের বারাহিনগর গ্রামের নুরুজ্জামান বেপারী ছেলে আবু তাহের বলেন, আর্থিক কষ্ট জীবনের সাথে মিশে গেছে। কেউ কোনো খোঁজ-খবর নেয় না। এই কষ্ট থেকে মুক্তি পাব কিনা জানিনা। সরকার আমাদের দিকে সদয় দৃষ্টি দিলে হয়তো শান্তিতে মারা যেতে পারি।
এ বিষয়ে যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য ও সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা টিনা পাল বলেন, আমার জামুকাতে তালিকা পাঠিয়েছি। বিভাগীয় পর্যায়ে ভাইবার মাধ্যমে তালিকা চূড়ান্ত হবে।
যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য বীরমু্ক্তিযোদ্ধা মাহমুদুর রহমান বেলায়েত বলেন, আমরা যাচাই-বাছাই করে তালিকা পাঠিয়েছি। কতৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।