আলোচিত নুসরাত জাহান রাফি হত্যার রায় প্রকাশের একবছর পূর্ণ।রায় এখনো অকার্যকর, হতাশ পরিবার।

সাখাওয়াত হোসেন (ফেনী)ঃ
ফেনীর সোনাগাজী ইসলামীয়া ফাজিল মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলার রায় প্রকাশের এক বছর পূর্ণ হলো আজ। গত বছরের এ দিনে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ বহুল আলোচিত এ মামলায় অভিযুক্ত ১৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড ও এক লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দেন।
তবে বিচারিক আদালতে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ৪ আসামি খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। এখন তা শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। এদিকে দীর্ঘ এক বছরেও রায় কার্যকর না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন নুসরাতের স্বজনরা।
শুক্রবার নুসরাতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, এখনও পুলিশ ওই বাড়িতে পাহারা বসিয়ে নুসরাতের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা দিয়ে আসছেন। বাড়িতে এখনও চাঞ্চল্য ফেরেনি। এখনও নুসরাতের বাবা, মা ও দুই ভাই তার স্মৃতিরোমন্থন করে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন।
মামলার বাদী নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বলেন, ‘আমরা বিচারিক আদালতে ন্যায়বিচার পেয়েছি। রায় দ্রুত কার্যকরের মাধ্যমে নুসরাতের আত্মা শান্তি পাবে। ঘাপটি মেরে থাকা অপরাধীদের জন্য এটি হবে একটি নিদর্শন। রায়ের এক বছর পরও সাজা কার্যকর না হওয়া অপ্রত্যাশিত।’ জরুরিভিত্তিতে উচ্চ আদালতের আপিল শুনানি শেষে দ্রুত সাজা কার্যকরের দাবি নুসরাতের বড় ভাইয়ের।
অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে থানায় করা শ্লীলতাহানির অভিযোগ প্রত্যাহার না করায় ২০১৯ সালের ৬ এপ্রিল পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে মাদরাসার সাইক্লোন শেল্টার ভবনের ছাদে ডেকে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে নুসরাতকে হত্যার চেষ্টা করেন তার সহপাঠীরা। এতে তার শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়। চিকিৎসার জন্য আনা হয়েছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। সেখানে পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাতে তার মৃত্যু হয়।
ঘটনাটি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশি গণমাধ্যমেও সমালোচনার ঝড় তোলে। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবিতে রাস্তায় নেমেছিলেন আন্দোলনকারীরা। নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।