৭ শিক্ষার্থীকে পড়ান ৬ জন শিক্ষক, তবুও সবাই ফেল!

শেখ লিয়াকত আহম্মেদ, নিজস্ব প্রতিবেদক
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার সৈয়দ আবুল হোসেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে এইচএসসি পরীক্ষায় ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে চরম ফল বিপর্যয় ঘটেছে। কলেজে মাত্র ৭ জন শিক্ষার্থীকে পড়ানোর জন্য রয়েছেন ৬ জন শিক্ষক, তবুও পরীক্ষায় অংশ নেওয়া সব শিক্ষার্থীই অকৃতকার্য হয়েছে।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ৭ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। কিন্তু ফল প্রকাশের পর দেখা যায়, একজনও পাস করেনি। এতে কলেজজুড়ে হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
অন্যদিকে, ওই বিভাগীয় শিক্ষকরা দাবি করেছেন ফলাফলে ত্রুটি থাকতে পারে। শিক্ষার্থীরাও নিজেদের ফলাফল চ্যালেঞ্জ করে খাতা পুনর্মূল্যায়নের আবেদন করেছে।
গত ১৬ অক্টোবর প্রকাশিত এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে একই কলেজের মানবিক ও বিজ্ঞান বিভাগে পাশের হার ছিল ৭৩.৯৭ শতাংশ। কিন্তু ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে শূন্য ফলাফল কলেজটির সুনামকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।
স্থানীয় অভিভাবক মো. কালাম হাওলাদার বলেন, 'এই কলেজের আগের মতো সুনাম আর নেই। এখন শিক্ষকরা নিজেদের মধ্যে দলাদলিতে ব্যস্ত। নিয়মিত ক্লাস হয় না, শিক্ষার্থীরাও তাই অনিয়মিত। ক্লাস না হলে ভালো ফল হবে কীভাবে?'
কলেজের অ্যাডহক কমিটির বিদ্যোৎসাহী সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক বেপারী বলেন, 'কলেজের শিক্ষকরা নিজেরাই নিয়মিত নন। রাজনৈতিক বিভাজন ভুলে সবাইকে ক্লাসমুখী হতে হবে। শিক্ষকরা যদি আন্তরিকভাবে ক্লাস নেন, শিক্ষার্থীদেরও ক্লাসে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। তবেই কলেজের আগের ঐতিহ্য ফিরবে।'
এ বিষয়ে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিজামুল হক তালুকদার বলেন, 'ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের খাতা পুনর্মূল্যায়নের আবেদন করেছে। আমরা বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।'
স্থানীয় অভিভাবক ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, শিক্ষক সংকট না থাকলেও দায়িত্বহীনতা, অনিয়মিত ক্লাস এবং প্রশাসনিক উদাসীনতাই এই ফল বিপর্যয়ের মূল কারণ।