করোনায় নিহত রুহুল আমিন এর পরিবারের দায়িত্ব নিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এম আব্দুল করিম সিলেট জেলা প্রতিনিধিঃ
করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা বাংলাদেশের প্রথম পুরুষ নার্স সিলেটের রুহুল আমিনের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি। রুহুল আমিন সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের নার্সিং বিভাগে কর্মরত ছিলেন।
করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সেবা দিতে গিয়ে একপর্যায়ে তিনিও করোনা ভাইরাস পজিটিভ হয়ে যান এবং অবশেষে গত শুক্রবার রাত্রে তিনি এ পৃথিবী ছেড়ে চলে যান। তাঁর মৃত্যুর পর শোক প্রকাশের পাশাপাশি রুহুল আমিনের একমাত্র ছেলের পড়ালেখারও দায়িত্ব নিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন' র ব্যক্তিগত কর্মকর্তা শফিউল আলম জুয়েল জানান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যক্তিগত তহবিল থেকে রুহুল আমিনের ছেলের পড়ালেখার জন্য তাঁর স্ত্রীর নামে ২ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কিনে দেবেন, যেটি দিয়ে সিলেট জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট স্কুলের ৭ম শ্রেণীতে পড়ুয়া তাঁর ছেলে মোঃ আলীফের দৈনন্দিন পড়ালেখার খরচ চলবে এবং সেই সাথে তার টিউশন ফি ও একাডেমিক সকল ব্যয় মওকুফের উদ্যোগ নিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এদিকে, নিহত নার্সিং কর্মকর্তা রুহুল আমিনের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডাঃ মোঃ ইউনুছুর রহমান ও উপ পরিচালক ডাঃ হিমাংশু লাল রায়।
এছাড়াও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বাংলাদেশ নার্সেস এসোসিয়েশন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শাখার সভাপতি শামীমা নাসরিন ও সাধারণ সম্পাদক ইসরাইল আলী সাদেক।
এক বিবৃতিতে শামীমা নাসরিন ও ইসরাইল আলী সাদেক বলেন, করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকেই সিলেটের নার্সদের জন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি সার্বক্ষণিক নার্স ও চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত সকলের খোঁজখবর নেয়ার পাশাপাশি নিরাপত্তা সামগ্রীও পাঠিয়েছেন। এতে সিলেটে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) আক্রান্ত রোগীদের সেবা দেয়া নার্সরা উৎসাহ ও উদ্দীপনা পেয়েছেন। এছাড়া নার্সিং কর্মকর্তা রুহুল আমিন মারা যাওয়ার পরপরই তিনি তাঁর খোঁজখবর নিয়েছেন এবং এবার তিনি তাঁর ছেলের পড়ালেখার দায়িত্বও নিয়েছেন। এতে আমরা মনেকরি তিনি সবসময় আমাদের পাশে রয়েছেন এবং থাকবেন সবসময়। আমরা তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ।
উল্লেখ্য যে, নার্সিং অফিসার রুহুল আমিন গত ২২ মে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন এবং গত শুক্রবার তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে,তাকে শহীদ শামসুদ্দিন আহমেদ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। কিন্ত দুঃখজনক ব্যপার হল ঐ দিন রাত্রেই তিনি মৃত্যু বরণ করেন। নিহত রুহুল আমিনের গ্রামের বাড়ি নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলায়। তিনি ১৯৯৪ সালে সিলেট নার্সিং কলেজ থেকে নার্সিং পাশ করেন এবং ১৯৯৮ সালে সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন। সর্বশেষ তিনি সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন আহমেদ হাসপাতালে নার্সিং অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।