একনেক সভায় নিজ নামে বিদ্যুৎ প্রকল্পে শেখ হাসিনার আপত্তি

 প্রকাশ: ১১ অগাস্ট ২০২১, ০২:২৬ পূর্বাহ্ন   |   জাতীয়



গণভবনে থেকে মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জামালপুর মাদারগঞ্জে দেশের সর্ববৃহৎ সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিজের নামে করতে আপত্তি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


মঙ্গলবার একনেক সভার পর পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের একথা জানান।

এদিনের সভায় পরিবেশসম্মত বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে কার্বন নিঃসরণ কমাতে জামালপুরের মাদারগঞ্জে ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ‘শেখ হাসিনা সোলার পার্ক’ প্রকল্পটি উঠেছিল। সৌর বিদ্যুৎ খাতে দেশের সবচেয়ে বড় এই প্রকল্প অনুমোদনও হয়।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “প্রধানন্ত্রী বলেছেন, ‘এখানে আমার নাম থাকবে না’। তখন সদস্যরা তাকে অনেক বিনয়ের সঙ্গে বলেছেন যে এদেশের পরিবেশ রক্ষায় সৌর বিদ্যুতের প্রয়োজনে আপনিই উদ্যোগ নিয়েছেন। আপনি এই সেক্টরে লিড দিচ্ছেন। এটা একটা আইকনিক প্রকল্প হবে, তাই এই প্রকল্পটা আপনার নামে হওয়া উচিৎ।
“তিনি (প্রধানমন্ত্রী) খুবই দৃঢ়ভাবে বলেন, ‘না এখানে আমার নাম হবে না, আপনারা অবশ্যই এই নাম পরিবর্তন করবেন’।”

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “এই নাম বঙ্গবন্ধু ট্রাস্ট থেকে অনুমোদিত বলে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করা হয়। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রয়োজনে আমি তাদের সঙ্গে কথা বলব’।”
প্রধানমন্ত্রী এই প্রকল্পের নাম ‘সোলার পাওয়ার মাদারগঞ্জ’ রাখার পরামর্শ দেন বলে জানান মন্ত্রী।
এক হাজার ৫১২ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পটি মূলত ভারতীয় ঋণে বাস্তবায়িত হবে।

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
বৈঠক শেষে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে আসেন পরিকল্পনামন্ত্রী মান্নান, প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম ও পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মো. জয়নুল বারী।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পটিতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৫১২ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩১৯ কোটি টাকা দেওয়া হবে। ভারতীয় ঋণ থেকে জোগান দেওয়া হবে প্রায় ১ হাজার ১১৬ কোটি টাকা। সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় ৭৭ কোটি টাকা আসবে।
রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (আরপিসিএল) আগামী ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ করবে।

এদিনের বৈঠকে প্রায় ৭ হাজার ৯৮৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৬ হাজার ৬৬০ কোটি ২৯ লাখ টাকা দেওয়া হবে। সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ১৩৭ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ হিসেবে ১ হাজার ১৮৮ কোটি ১৩ লাখ টাকার জোগান দেওয়া হবে।

অন্য প্রকল্পগুলো
‘জরাজীর্ণ, অপ্রশস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিদ্যমান বেইলি ও অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ সেতু প্রতিস্থাপন প্রকল্প (রংপুর জোন)’ প্রকল্প। ব্যয় ৮৬১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।

‘বাগেরহাট-রামপাল-মংলা জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নয়ন’ প্রকল্প। ব্যয় ৪৬৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।

গ্রাম পর্যায়ে টেলিটকের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং ৫জি সেবা প্রদানে নেটওয়ার্ক আধুনিকায়ন’ প্রকল্প। ব্যয় ২ হাজার ২০৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।

 দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে মুক্তিযুদ্ধের অডিও ভিজ্যুয়াল দলিল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ এবং বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের সক্ষমতা বৃদ্ধি’ প্রকল্প। ব্যয় ৬২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
চর ডেভেলপমেন্ট এন্ড সেটেলমেন্ট প্রজেক্ট-৪ (অতিরিক্ত অর্থায়ন)(এলজিইডি অংশ)’ প্রকল্প। ব্যয় ১০৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

‘ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্প। ব্যয় এক হাজার ৯০ কোটি টাকা।
‘পল্লী জীবিকায়ন প্রকল্প-৩য় পর্যায়’ প্রকল্প। ব্যয় ৯২৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।

‘কুড়িগ্রাম জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত দুধকুমার নদী ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন প্রকল্প’। ব্যয় ৬৯২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
উপকূলীয় চরাঞ্চলে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প। এর ব্যয় বাড়ছে ৫৯ কোটি ৯ লাখ টাকা।

জাতীয় এর আরও খবর: