নিষেধাজ্ঞায় রপ্তানি বন্ধ, সীমান্তে ট্রাকেই পচছে সাড়ে ৩ হাজার টন ভারতীয় পেঁয়াজ

 প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:৩৭ অপরাহ্ন   |   অর্থ ও বাণিজ্য



মনা,নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

পেঁয়াজের ঝাঁঝে সাধারণ মানুষের মতোই বিপাকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য। চলতি মাসের শুরুর দিকে হঠাৎ পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ভারত সরকার। ফলে পশ্চিমবঙ্গের স্থলবন্দরগুলোতে আটকা পড়েছে পেঁয়াজ বোঝাই বহু ট্রাক। বাংলাদেশে ঢুকতে না দিলে এসব ট্রাকে থাকা প্রায় তিন হাজার টন পেঁয়াজ পচে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।

সূত্র জানায়, ভারতের উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের ঘোজাডাঙ্গা স্থলবন্দরে বাংলাদেশ-ভারত আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে ৩০ থেকে ৩৫টি পেয়াঁজ বোঝাই ট্রাক। প্রতিটি ট্রাকেই বস্তা বস্তা পেঁয়াজ। কেন্দ্রীয় সরকারের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কারণে গত ৭ ডিসেম্বর থেকে পেঁয়াজ বোঝাই ট্রাকগুলো আটকে রয়েছে ঘোজাডাঙ্গা স্থলবন্দরে। এগুলোতে থাকা প্রায় ৪৫০ টন পেঁয়াজ পচে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

এ অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকগুলো থেকে কিছু পেঁয়াজ নামিয়ে স্থানীয় খোলাবাজারে বিক্রির চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ীরা। সময় যত যাবে পচন ততই বাড়বে। তাই সম্ভাব্য ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা কমানোর জন্য নামমাত্র দামে খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন তারা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই চিত্র শুধু ঘোজাডাঙ্গায় নয়, গোটা পশ্চিমবঙ্গে একই পরিস্থিতি। রাজ্যের স্থলবন্দরগুলোতে আনুমানিক তিন হাজার টন পেঁয়াজ আটকে রয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।

তবে এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে রাজি নন ঘোজাডাঙ্গা আমদানি-রপ্তানি সংস্থার কর্মকর্তারা। তারা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশেই পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ রাখা হয়েছে। পাঞ্জাবের বাসিন্দা ও মহারাষ্ট্রের ট্রাকচালক সুকদেব সিং বলেন, আমি ৭ ডিসেম্বর থেকে সীমান্তে আটকে রয়েছি। সব পেঁয়াজ পচে যাচ্ছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। এখন বাংলাদেশে পেঁয়াজ যাবে না। পেঁয়াজ বোঝাই আরেকটি ট্রাকের চালক অতনু ঘাঁ বলেন, আমি পাঁচদিন ধরে ট্রাক নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছি। বাংলাদেশে কোনো পেঁয়াজ নিতে দেওয়া হচ্ছে না। এখন সব মাল গোডাউনে ফেরত নিয়ে যেতে হবে।


স্থানীয় পেঁয়াজ রপ্তানিকারী স্বদেশ মন্ডল বলেন, ভারতে পেঁয়াজের দাম বেশি থাকায় কেন্দ্রীয় সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এ কারণে সীমান্তে সারিবদ্ধভাবে পেঁয়াজ বোঝাই ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে। এতে প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। শিগগির বাংলাদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা না করলে ৯০ শতাংশ পেঁয়াজই নষ্ট হয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, ভারত সরকারের কাছে অনুরোধ করবো, এসব পেঁয়াজ বাংলাদেশে পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হোক। তা নাহলে পেঁয়াজগুলো পচে কয়েকশ’ কোটি রুপি ক্ষতি হতে পারে। পচাগুলো বাদ দিয়ে ভালো পেঁয়াজ স্থানীয় বাজারে কম দামে বিক্রি করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।

বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ হওয়ার পর থেকে কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী শহরাঞ্চলগুলোতে বড় আকারের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৫০ রুপিতে। একটু ছোট আকারের পেঁয়াজের দাম কোথাও প্রতি কেজি ৩৫ আবার কোথাও ৪৫ রুপি দেখা যাচ্ছে।

অর্থ ও বাণিজ্য এর আরও খবর: