যশোরের মণিরামপুরে ভাইকে বৈধ কাগজ পত্রে সৌদিতে এনে মানবপাচারে আসামী হলেন বোন

 প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০১:২৪ পূর্বাহ্ন   |   খুলনা


আব্দুল জব্বার, যশোর জেলা ব্যুরো প্রধান।।


সৌদি প্রবাসী এক বোন তার চাচাতো ভাইকে বৈধ কাগজে সৌদিতে এনে বিপাকে পড়েছে। এমনকি ঐ ভাইয়ের দায়ের করা মানবপাচার  মামলার আসামী হতে  হয়েছে বোন লাবনীকে।


জানা যায়, যশোরের মণিরামপুর উপজেলার মদনপুর গ্রামের মৃত শহর আলীর কন‍্যা লাবনী ও তার স্বামী সিরাজুল বিগত ২১ বছর ধরে সৌদিতে অবস্থান করে আসছে। এরই মাঝে গত ২০১৭  সালের নভেম্বর মাসে লাবনী তার ভবঘুরে চাচাতো ভাই মামুনকে বৈধ কাগজ পত্রের মাধ‍্যমে সৌদিতে নিয়ে আসে এবং তার নিজ দোকানের সকল দায়িত্ব দেয়। কিন্তূ মামুন দায়িত্বে অবহেলা ও বেপথে অর্থ ব‍্যয় করা শুরু করে। জানতে পেরে তার বোন লাবনী বকাশকা দেয়। ফলে ৪ মাস কাজ করার পর  হঠাৎ একদিন মামুন অন‍্যত্রে  পালিয়ে যায়। 

সেখান থেকে মামুন ধরা খেয়ে ২০১৮ সালের শেষের দিকে দেশে ফিরে আসে। এক বছর অতিবাহিত হলেও কোন নড়াচড়া দেয়নি মামুন। কিন্তু স্থানীয় হরিহরনগর ইউনিয়ের ৪ নং ওয়ার্ডর মেম্বর সামছুররহমান সহ ৪/৫ জনের একটি চক্রের কুপরামর্শে ঐ মেম্বরের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করে মামুন। সেই অভিযোগের পেক্ষিতে গত ২১-১১-২০১৯ তারিখে স্থানীয় ভাবে শালিস বৈঠাক বসানো হয়। ঐ শালিসে লাবনী কোন কথা না শুনে মেম্বর  পক্ষপাতিত্ব করে  তার বিরুদ্ধে অনেক কিছু  লেখা হয়েছে ও মামুনকে ৩ লাখ টাকা দেওয়ার কথা উল্লেখ করে শালিস নামায় লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এর পর ঐ চক্রটির যোগসাজসে গত ২৭-১১-২০১৯ তারিখে মামুন বাদী হয়ে বোন লাবনীকে আসামী করে ৬ জনকে স্বাক্ষী দিয়ে  আদালতে একটি মানবপাচার  মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর পি- ৩০/১৯।  মামলাটি তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদনের জন‍্য আদালত পিআইবি পুলিশের দায়িত্বে দেন। পিআইবি গত ৯-৬-২০২০ তারিখে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিলু করেছেন। এদিকে মামলার স্বাক্ষী বাদীর পিতা ও ভাই বাদে  স্বাক্ষী রশিদ, আনিছুর, আমিনুর, হাবিবুর ও জামাল উদ্দীন আসামীর পক্ষে এভিডেভিট করে দিয়েছে। শুধু এই নয় গত ১০-৮-২০২০ তারিখে বাদী মামুন এর পিতা আনছার আলী বাদী হয়ে লাবনী ও তার স্বামী সিরাজুলের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জনকে আসামী করে আদালতে আরো একটি সাতধারা মিথ‍্যা মামলা করেছে। মামলায় উল্লেখ‍্য দ্বিতীয় পক্ষ দূ:দান্ত প্রকৃতির লোক এবং  প্রথম পক্ষের বাড়িতে অনধিকার ভাবে প্রবেশ করে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখানো ও জানমালের ক্ষতি সাধন করার চেষ্টা ঊল্লেখ করা হয়েছে।  

উল্লেখ‍্য লাবনী ও তার স্বামী দীর্ঘকাল ধরে সৌদিতে অবস্থান করাই অধিক অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছে। তাই তাদের অর্থের প্রতি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ কয়েকজনের কুনজর পড়েছে। যার কারনে তারা  সামান‍্য গোলযোগের সুযোগ পেয়ে মামুনকে দিয়ে নাটক বানিয়ে মিথ‍্যা  মানবপাচার মামলা দায়ের করাচ্ছে। এবং প্রচার করছে ওরা জীবনেও আর সৌদিতে যেতে পারবেনা। ঐ চক্রটি মনে করছে ওদেরকে বিপদে ফেলা  হয়েছে কাছে আসবে তখনি মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতে পারবো। এ বিষয়ে মানবপাচার মামলার স্বাক্ষী রশিদ ও আমিনুর জানাই, আমরা মামলা সম্পর্কে কিছুই জানিনা। তা ছাড়া আমরা স্বাক্ষী এভিডেভিট করে দিয়েছি। কথা হয় মামলার আসামী লাবনীর সাথে তিনি প্রতিনিধিকে বলেন, আমি আমার চাচাতো ভাইকে বৈধ কাগজ করে সৌদিতে এনেছিলাম। সে বাটপাড়ি করে আমার কাছ থেকে চুরি করে পালিয়ে যেয়ে  অন‍্যত্রে কাজ করতে যায়। সেখান থেকে ধরা খেয়ে দেশে চলে আসে। এখানে মানবপাচারের কোন বিষয় আসতে পারেনা। তার পরও   স্থানীয় কিছু লোকের কুপরামর্শে মামুন মিথ‍্যা মানবপাচার মামলা করেছে বলে দাবী করছে মামলার আসামী লাবনী।

খুলনা এর আরও খবর: