ঢাকা আরিচা মহাসড়কে জনদুর্ভোগ চরমে

 প্রকাশ: ২৮ অগাস্ট ২০২৩, ০৯:২৩ অপরাহ্ন   |   জনদুর্ভোগ




মানিকগঞ্জের ঢাকা আরিচা মহাসড়কের গোলড়া বাস স্ট্যান্ডের কিছু গজ সামনে 

সাউদার্ন সিএনজি ফিলিং স্টেশনের সামনে রাস্তার একপাশে খালের মত গর্ত করে রাখার কারণে সড়কে দেখা দিয়েছে জনদুর্ভোগ। ব্যাহত হচ্ছে গ্যাস লাইনের ওপর রাস্তা নির্মাণকাজ। ফলে সড়কের কাজ শেষের দিকে হলেও পরে খোঁড়াখুঁড়ির কারণে ভোগান্তিতে পড়েছে লোকাল লেন এর গণপরিবহন ও পথচারী। 


রাস্তায় এ গর্ত খুঁড়ে যানবাহন চলাচল ও স্থানীয় এলাকাবাসীর যাতায়াতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে বলে স্থানীয় সুত্রে খবর পাওয়া যায়।


প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা আরিচা মহাসড়কে চলছে সম্প্রসারণের কাজ।

এক পাশ দিয়ে মাটির প্রায় কয়েক ফিট গভীরে গ্যাসের লাইন টানা রয়েছে।


গ্যাস সংযোগ নেওয়ার জন্য মহাসড়কের পাশে মাটির নিজ দিয়ে যাওয়া গ্যাসলাইন থেকে সংযোগ নিতে সাউদার্ন সিএনজি ফিলিং স্টেশন গ্যাস সংযোগ স্থাপন করে কিন্ত কয়েক মাস আগে ঢাকা আরিচা মহাসড়কের গোলড়া এলাকায় চার লেনের রাস্তা নির্মাণের জন্য ওই এলাকায় পাইলিং কাজ শুরু করে শ্রমিকরা। এ সময় গোলড়া এলাকায় সড়কে রাস্তার এক পাশে সাউদার্ন সিএনজি ফিলিং স্টেশনের সামনে গ্যাস সঞ্চালন লাইনের পাইপ উপরে চলে আসে।পাইপ মেরামতের কাজ শেষ না করেই সড়ক খুঁড়ে অরক্ষিত অবস্থায় রাখা হয়েছে। এর ফলে, যেকোনও সময় লোকাল লেন এর গণপরিবহন গুলোর অসাবধানতার কারনে গ্যাস লাইনের পাইপ লিকেজ হয়ে অগ্নিদুর্ঘটনাসহ বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।



সাউদার্ন সিএনজি ফিলিং স্টেশনের সামনে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গর্তের কাছে হালকা ও ভারী যানবাহন এসে গতি কমিয়ে দেন চালকরা। এতে যানবাহনের সামনে ও পিছনের চাকা গর্তের মধ্যে পড়ে পুরো পরিবহন এক পাশে হেলে পড়ে। এতে যাত্রীরা হঠাৎ আঁতকে উঠে। কোন কোন সময় চালকরা অসাবধানঃবশত দ্রুত গতিতে গর্ত পার হলে প্রচণ্ড বেগে ঝাঁকুনিতে পড়ে যাত্রীরা। দ্রুত গতির মোটরসাইকেল চালকরা গর্তে পরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যেতেও দেখা গেছে।


আজগর আলী নামের স্থানীয় এক পথচারি জানান, এটি একটি ব্যস্ততম মহাসড়ক। লোকাল লেন এর যানবাহনগুলো চলাচল করে এই সড়কটি দিয়ে। রাতের এই গর্তের স্থানটি দূর থেকে ভালমত দেখা যায় না, যা আরও ঝুঁকি বাড়ায়। কারণ এখান থেকে বিভিন্ন লোকার পরিবহন চলাচলা করে, হঠাৎ করে গর্তের মধ্যে পড়লে দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন। 


আশিক মাহমুদ আকাশ বলেন, অপরিকল্পিত কাজের কারনে এত দুর্ভোগ। মানুষ তো তাও পাশ দিয়ে হেঁটে যেতে পারে কিন্তু অনেক সময় গাড়িগুলো ভুল করে ঢুকে যায় যে কারনে দূর্ঘটনার শংকা থাকে। দ্রুত সমাধান হওয়া উচিত।



আশরাফুল হোসেন জানান,

কোনো সাইন বোড নাই এখানে। সবাই 

উল্টো রাস্তায় পাম্প এ যাচ্ছে।রাস্তা বন্ধ লেখা থাকলে এতো ঘুরা লাগতো না।


মহাসড়ক আইন ২০২১ এ বলা আছে —মহাসড়ক উন্নয়ন, মেরামত বা রক্ষণাবেক্ষণ, মহাসভুক সংশ্লিষ্ট পয়ঃপ্রণালি, ড্রেন, কালভার্ট ও সেতু নির্মাণ বা সংস্কার করিবার উদ্দেশ্যে অথবা জনস্বার্থে, সরকার বা সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি মহাসড়ক বা উহার কোনো অংশবিশেষ সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করিতে পারিবে।


তবে শর্ত থাকে যে, মহাসড়ক বন্ধ ঘোষণার বিষয়টি মহাসড়ক ব্যবহারকারীগণের অবগতির জন্য বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার ও উক্ত মহাসড়কের একাধিক দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শন করিতে হইবে।



নিয়মে রয়েছে- জনদুর্ভোগ হয় এমন সময় সড়ক খোঁড়া যাবে না। ২৮ দিনের মধ্যে সংস্কার কাজ শেষ করতে হবে। কিন্তু এসব নিয়ম না মেনে সড়ক-মহাসড়কে উন্নয়ন কাজে গ্যাস লাইনের পাইপটি কারনে ভোগান্তিতে পড়ছে মানুষ।



এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন জাগির জোনের প্রকৌ. মো. আতিকুল হক সিদ্দিকী বলেন, কয়েক দিনের মধ্যে আমরা গ্যাস লাইনের পাইপ মেরামত করবো। তবে গ্যাসের পাইপ মেরামতের জন্য সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর ও বিস্ফোরক সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে অনুমতি নিতে হবে। কয়েক দিনের মধ্যে অনুমোদন পেলে রোডে আমরা গ্যাস লাইনের পাইপ মেরামতের কাজটি শুরু করবো।



উল্লেখ্য, ঢাকা আরিচা মহাসড়কের পাটুরিয়া থেকে নবীনগর পর্যন্ত চলছে ফোরলেন নির্মাণকাজ।সরকারের জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম ঢাকা-আরিচা মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প৷ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মানিকগঞ্জের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার সড়ক পথে যোগাযোগ সহজ, দ্রুত, যানজটমুক্ত ও উন্নততর হবে।

 


মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

মো:- আরিফুর রহমান অরি

জনদুর্ভোগ এর আরও খবর: