যশোরে শেখ হাসিনার অধীনে কোনভাবেই সুস্থ নির্বাচন হতে পারে না বিএনপির নেতা:রিজভী

 প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৩, ০৯:৫০ পূর্বাহ্ন   |   রাজনীতি



মনা,নিজস্ব প্রতিনিধিঃ.

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, দেশে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে আলোর গতিতে। অথচ প্রধানমন্ত্রী বিদেশে গিয়ে উন্নয়নের গল্প শোনাচ্ছেন। এটি দেশের মানুষের সাথে ধোকাবাজি ছাড়া কিছুই না। ২০০৬ সালে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ৪০ বছর আগে ছাত্রদলের কমিটিতে কোনো একটি পদে ছিলেন বলে শেখ হাসিনা তার নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার মানেননি। বিএনপি আজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের ভোট মানবেন কীভাবে। শেখ হাসিনার অধীনে কোনোভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। শনিবার বিকেলে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে যশোরের চারখাম্বা মোড়ে আয়োজিত জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের কারাগার আর বাড়ির মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। পুলিশ রাতে বাড়ি বাড়ি যায়। দিনে পিছনে লেগে থাকে। এখন বাড়িতো, তখন কারাগারে থাকতে হচ্ছে। গোটা দেশটায় এখন কারাগার। 

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে বলে বেড়াচ্ছেন। এটি বলে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপিকে টোপ দিচ্ছেন। অথচ গাজীপুরে ৫৪ শতাংশ মানুষ কেন্দ্রেই যায়নি। একজন বৃদ্ধার কাছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হেরেছে দেখেই বোঝা যায় তাদের অবস্থান বর্তমানে. কোথায়। সংবিধানের দোহাই দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা যাবে না বলে আওয়ামী লীগ বার বার বলছে। সংবিধান কি ভারী কোনো পাথর যে সংশোধন করা যাবে না। সংবিধান মানুষের প্রয়োজনে। এ কারণে রাষ্ট্রের নাগরিকদের প্রয়োজনে এটি সংশোধন করে হলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু করতে হবে। 

রুহুল কবীর রিজভী বলেন, আমেরিকার ভিসানীতি চেপে রেখেছিল সরকার। কিন্তু তাতে পার পায়নি। আর এ কারণে প্রতিহিংসায় রাষ্ট্রদূতদের প্রটোকল প্রত্যাহার করেছেন। অথচ আমাদের গার্মেন্ট শিল্পে অধিকাংশ পণ্য আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে যায়। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিহিংসার কারণে হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে যেতে পারেন। 

তিনি বলেন, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় জনগণ জেগে উঠেছে। এখন নেতৃত্ব দিতে হবে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোকে। আওয়ামী লীগ এই দেশকে তাদের পৈতৃক সম্পত্তি মনে করে। এ কারণে পুলিশ দিয়ে অত্যাচার করাচ্ছে। 

প্রধান বক্তার বক্তৃতায় বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেছেন, সমাবেশকে কেন্দ্র করে যশোরের মানুষের ওপন নজিরবিহীন নির্যাতন হয়েছে। অনেক নেতাকর্মী সাতদিন বাড়িঘর ছেড়ে এক কাপড়ে এখানে সেখানে ঘুরে বেড়িয়েছেন। এমনকী নারীরাও তিন চারদিন এক কাপড়ে ছিলেন। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা সমাবেশ করতে দেবেন না আস্ফালন করে ভীতির সৃষ্টি করেন। কিন্তু তাদের সেই ফাঁকা আস্ফালন কাজে লাগেনি। বিএনপি দায়িত্বশীল আচরণ করে। তারই অংশ হিসেবে এসএসসি পরীক্ষা থাকায় সোয়া একটায় সমাবেশ শুরু করা হয় বলে উল্লেখ করেন অমিত। তিনি বলেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের সফলতা অর্জনে আমাদের ধৈর্যের পরিচয় দিতে হবে। কোনো নেতাকর্মীর গায়ে যদি টোকা পড়ে তাহলে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন অমিত।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তৃতা করেন কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক জাহানারা সিদ্দিকী, সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবিরা নাজমুল মুন্নি, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ ইসহক, মাগুরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান হাবিব কিশোর, জেলা বিএনপি নেতা মোহাম্মদ মুছা, আব্দুস সালাম আজাদ ও কাজী আজম, নগর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম মুল্লুক চাঁদ, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুরুল হক খোকন, কেশবপুর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম বিশ্বাস, মণিরামপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহিদ ইকবাল প্রমুখ।

রাজনীতি এর আরও খবর: