পার্বত্য চট্টগ্রামকে পৃথক রাষ্ট্রে পরিণত করার সুদূর প্রসারী ষড়যন্ত্র চলছে।

 প্রকাশ: ১১ অগাস্ট ২০২০, ১১:৩৯ অপরাহ্ন   |   চট্টগ্রাম


খাগড়াছড়ি প্রতিনিধিঃ


পার্বত্য নাগরিক পরিষদের সাধারন সম্পাদক আলমগীর কবির বলেছেন,ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের "আদিবাসী"হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবীর আড়ালে পার্বত্য চট্টগ্রামকে পৃথক রাষ্ট্রে পরিণত করার সুদূর প্রসারী ষড়যন্ত্র চলছ। 


পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। ১৯৭১ সালে এদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদশের অংশ হিসাবে অস্বীকারকারী চক্র এ অঞ্চলে বসবাসকারী উপজাতীয় জনগোষ্ঠীকে উপজাতী হিসেবেই স্বীকার করত। ১৯৯৭সালে সরকারের সাথে স্বাক্ষরিত শান্তিচুক্তিতেও পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী উপজাতীয়দের পক্ষে স্বাক্ষর করলেও দেশী ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে বর্তমানে তারা নিজেদের "আদিবাসী"বলে প্রচার করছে।

বাংলাদেশে বসবাসকারী উপজাতিদের আদিবাসী সম্বোধন না করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। পত্রিকান্তরে প্রকাশিত খবরে আরো বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে দেশী—বিদেশী বিভিন্ন মহল ও এনজিওর স্বতন্ত্র খৃস্টান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে তাদের ওপর নজরদারি ও সতর্কতামূলক কার্যক্রম বৃদ্ধি করার নির্দেশও দিয়েছে মন্ত্রণালয়। গত ২৮/০১/২০১০ইং তারিখে স্মারক নং—পাচবিম(সম—২)/২৯/২০১০/২৫ এ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (সমন্বয়—২)—এর জারি করা প্রজ্ঞাপনে এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পত্র নং —২২.০৯.১.০.০.২৪.২০০৯(অংশ—৮)—৭৯৯, তারিখ: ২৮/০১/২০১০ এর মাধ্যমে বাংলাদেশে কোন আধিবাসী নাই বলে জানানো হলেও বাংলাদেশে বসবাসরত  উপজাতিদের আদিবাসী বলে আখ্যাদানকারী বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, নেতৃবৃন্দ ও সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সমালোচনাও করা হয়েছে। আমরাও মনে করি ‘উপজাতি' আর ‘আদিবাসী' এক বিষয় নয়।


উপজাতিদের জোর করে যেমন ‘আদিবাসী' বলা সঙ্গত নয়, তেমনি আদিবাসীদেরও জোর করে ‘উপজাতি' বলা সঙ্গত নয়। কিন্তু সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে বসবাসকারী উপজাতিদের অযৌক্তিকভাবে আদিবাসী বলার একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে এবং বিশেষ মহলের প্রণোদনায় দিন—দিনই এই প্রবণতা প্রবল হয়ে উঠছে। উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশের কোনো সরকারই কখনো বাংলাদেশের উপজাতীয় বাসিন্দাদের আদিবাসী বলে স্বীকার করেনি। 


কিন্তু অবাক ব্যাপার হলো বাংলাদেশের বহু বুদ্ধিজীবী, কিছু মিডিয়া, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এমনকি বামপন্থি দলের কিছু এমপিসহ অনেকেই এখন নানা উপলক্ষে উপজাতিদের আদিবাসী বলে অভিহিত করছেন। কোনো স্বাধীন দেশে এমন কান্ডজ্ঞানহীন তৎপরতা কীভাবে অব্যাহত থাকে তা ভাবতে গেলে বিস্মিত হতে হয়!তবে আশার কথা এই যে, এমন পরিস্থিতির মধ্যেও দু'একটি পত্রিকা জাতীয় স্বার্থে উপজাতি ও আদিবাসী প্রসঙ্গে সঠিক তথ্য—উপাত্ত জনগণের সামনে তুলে ধরার দায়িত্ব পালন করছে।


এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, ২০০৫ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতিসংঘ অনুবিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সর্বপ্রথম সরকারীভাবে জানানো হয় যে, বাংলাদেশে কোনো আদিবাসী নেই এবং একই সাথে বাংলাদেশে বসবাসকারী উপজাতি জনগোষ্ঠীকে ‘আদিবাসী' না বলতে নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাংলাদেশের উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর কতিপয় নেতা জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে নিজেদের আদিবাসী বলে পরিচয় দিয়ে তাদের নানা কর্মসূচি বাস্তবায়নে তৎপর হয়ে ওঠে। 


তাদের লক্ষ্য হলো, বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম ও তৎসংলগ্ন ভারতের কিছু অংশ এবং মিয়ানমারের বিশাল এলাকার বাসিন্দাদের জাতিসংঘের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের সহায়তায় ব্যাপকহারে খৃস্টানকরণ এবং পূর্বতিমুরের মতো স্বতন্ত্র খৃস্টান "বাফার স্টেট" প্রতিষ্ঠা করা। 

এই ষড়যন্ত্রের কথা ফাঁস হয়ে গেলে বাংলাদেশ সরকারের নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট মহল সতর্ক হয়ে ওঠেন।  ফলে জাতিসংঘের আদিবাসী বিষয়ক চার্টারে আদিবাসীদের স্বার্থরক্ষায় জাতিসংঘ তার সদস্যভুক্ত কোনো দেশে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারবে মর্মে ক্লজ থাকায় অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশও সেই চার্টারে স্বাক্ষর করতে আপত্তি জানায়। এরই প্রেক্ষিতে ২০০৮ সালের ২১ এপ্রিল থেকে ৫ মে পর্যন্ত অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের Permanent forum for indigenous people-এর ৭ম অধিবেশনে বাংলাদেশ স্পষ্টভাবেই জানিয়ে দেয় যে, 'The country has some tribal population and there are no indigenous people: এছাড়া অতিসম্প্রতি ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত ‘উপজাতীয় সম্প্রদায়গুলোকে আদিবাসী হিসেবে অভিহিত করার তৎপরতা প্রসঙ্গে' শিরোনামের গোপন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ৪৫টি উপজাতীয় জনগোষ্ঠী বসবাস করে। বাংলাদেশের সংবিধান, পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ আইন, পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদ আইন এবং ১৯৯৭ সালের শান্তি চুক্তিতে উপজাতীয় সম্প্রদায়গুলোকে ‘উপজাতি' হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। তাদের কোথাও ‘আদিবাসী' হিসেবে অভিহিত করা হয়নি। তথাপি কতিপয় নেতা, বুদ্ধিজীবী, পাহাড়ে বসবাসরত শিক্ষিত ব্যাক্তিবর্গ, এমনকি কিছু কিছু  সাংবাদিকরাও ইদানীং উপজাতীয় সম্প্রদায়গুলোকে ‘আদিবাসী' হিসেবে অভিহিত করছে। এতদ্ববিষয়ে বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠান, বিদেশী সংবাদ মাধ্যম, জাতিসংঘের আড়ালে থাকা খৃস্টান রাষ্ট্রসমূহ এসব ব্যক্তির সাহায্যে তাদের একটি পৃথক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে বসবাসকারী অধিকাংশ উপজাতীয় সম্প্রদায় নিজ নিজ ধর্ম—সংস্কৃতিতে অবস্থান না করে খৃস্টান হয়ে গেছে/যাচ্ছে । 


ইউএনডিপি, ডানিডা, এডিবিসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহ পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ এবং উপজাতীয়দের ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে তাদের প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামকে ঘিরে আসলেই চলছে পূর্ব—তিমুরের মত একটি খৃস্টান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র। তারই আলামত হলো, উপজাতীয়দের আদিবাসী বানিয়ে জাতিসংঘের ছত্রছায়ায় তথাকথিত আইনী আগ্রাসন চালাবার প্রচেষ্টা। 

বাংলাদেশ সরকার বিষয়টি সম্পর্কে অবগত। আম

চট্টগ্রাম এর আরও খবর: