টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রীর শ্রদ্ধা।

 প্রকাশ: ০৮ অগাস্ট ২০২০, ০৩:৩৬ পূর্বাহ্ন   |   গোপালগঞ্জ জেলা


গোপালগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি 

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন (এম পি)।


শুক্রবার (৭ আগস্ট) দুপুর ২ টায় তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।


শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘাতকদের এই মুজিববর্ষে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের সম্মুখিন করা হবে। ঘাতকদের মধ্যে এখনো ৫ জন জীবিত রয়েছে। মুজিববর্ষে একজনকে আনার পর তার ফাঁসির আদেশ কার্যকর হয়েছে এবং অন্যদের দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের মধ্যে একজন আমেরিকা রয়েছে। তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্পকে চিঠি লিখেছেন।


এছাড়া বঙ্গবন্ধুর ঘাতকেরা বিভিন্ন নামে পাসপোর্ট তৈরি করে অনেক বছর ভালো অবস্থানে ছিলো। তাই বাকিদেরও দ্রুত দেশে ফিরিয়ে বিচারের সম্মুখীন করা হবে।


মন্ত্রী আরও বলেন, করোনা ভাইরাস আসার পরে মধ্যেপ্রাচ্যে অবৈধভাবে বসবাসকারী ও অন্য বাংলাদেশীদের দেশে ফেরার জন্য চাপ প্রয়োগ করে খোনের সরকার। কিন্তু মধ্যেপ্রাচ্যোর রাষ্ট্রগুলোর সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকায় অনুরোধ করে জানাই, আমরা একসাথে এত লোক আনতে পারবো না। অল্প অল্প করে আনা হবে। তখন তারা রাজি হয়েছে। আর করোনা কালীন সময়ে প্রবাসী যারা কষ্টে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী তাদের জন্য বরাদ্দ দিয়েছেন ও তাদের ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।



 

প্রবাসীরা আমাদের দেশের সম্পদ, আমাদের ভাই-বোন তাই তাদের পাশে আমরা থাকবো। যদি তারা কোন কিছু দিতে নাও পারে তাদের আমরা হাসিমুখে গ্রহন করবো। এছাড়া মধ্যেপ্রাচ্য থেকে আগত প্রবাসীদের কিভাবে কাজে লাগাতে পারি সে বিষয়ে চিন্তা করা হচ্ছে। যার জন্য প্রধানমন্ত্রী ২০০ কোটি টাকার

প্রোগ্রাম হাতে নিয়েছেন।


লেবাননে নিহত ব্যক্তিদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, "লেবানন আমাদের বন্ধু দেশ। কোভিট ১৯ এর কারণে তাদের অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। সেখানে বাংলাদেশের প্রায় দেড় লক্ষ প্রবাসী আছে। তার মধ্যে অনেকেরই চাকরি নেই। তাই তাদের জন্য আমরা খাবার পাঠাচ্ছি। সেখানে বাংলাদেশীদের চিকিৎসার জন্য মেডিকেল টিম প্রস্তুত করেছিলাম কিন্তু ওখানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে কথা হয়েছে।


তিনি জানিয়েছে, উন্নত চিকিৎসার জন্য ফ্রান্স মেডিকেল টিম পাঠিয়ে দিয়েছে। তারা আমাদের কাছে চাল, বিস্কুট ও নুডুলস চেয়েছিলো সেগুলো পাঠানো হয়েছে। আর কোভিটে মৃত্যু বরণকারীর লাশ দেশে পাঠানোর সময় এমনভাবে বাক্সবন্দি করে যে পরিবার মৃতের মুখও দেখতে পারে না। আর মুসলিম দেশ গুগুলো ইসলামি শরীয়ত মোতাবেক লাম দাফন করে। এই সময়ে লাশ আনাটা খুবই ব্যায়বহুল। তারপর ও আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে লাশ এনেছি। কিন্তু অনেক দেশের এখানো ফ্লাইট বন্ধ রয়েছে তাই সমস্যা হচ্ছে।


এর আগে মন্ত্রী পবিত্র ফাতেহা পাঠ করে বঙ্গবন্ধু ও ৭৫ সালে ১৫ আগষ্ট তার পরিবারের শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করেন।


এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.এ.কে আব্দুল মোমেনের স্ত্রী সেলিনা মোমেন, গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক সাইদা সুলতানা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলী খান, ‌উপজেলা চেয়ারম্যান সোলায়মান বিশ্বাস, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল বাশার খায়ের, ‌সাধারণ সম্পাদক বাবুল সেখ, ‌ইউএনও নাকিব হাসান তরফদার পৌর মেয়র শেখ আহম্মেদ হোসেন মির্জা, ‌উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, ‌পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি তোজাম্মেল হক টুটুল সহ সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।


পরে তিনি জাতির পিতার স্থানীয় বাড়ি, জাদুঘর, লাইব্রেরী পরিদর্শন করেন এবং বঙ্গবন্ধু ভবনে রক্ষিত পরিদর্শন বইতে মন্তব্য করে স্বাক্ষর করেন।

গোপালগঞ্জ জেলা এর আরও খবর: