যশোর বেনাপোলে বৌদ্ধ বিহারে বৌদ্ধদের ধর্মীয় কঠিন চীবর দান উৎসব ২০২৪ অনুষ্ঠিত
মনা, যশোর প্রতিনিধিঃ
যশোর বেনাপোল বৌদ্ধ বিহারে বৌদ্ধদের ধর্মীয় উৎসব কঠিন চীবর দান উৎসব ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সকালে বেনাপোল বৌদ্ধ বিহার থেকে এক র্যালির মধ্য দিয়ে শুরু হয় দানোৎসবের। এ সময় ঢাকা, চট্রগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা অংশগ্রহন করেন। ঢাকার আশুলিয়ার বোধিজ্ঞান ভাবনা বৌদ্ধ বিহার কেন্দ্রের আবাসিক
প্রধান ভদন্ত বোধিমিত্র মহাস্থবির এর সভাপতিত্বে উৎসবের উদ্বোধন করেন বেনাপোল বৌদ্ধ বিহারের প্রধান ভদন্তশীল রক্ষিত ভিক্ষু অধ্যক্ষ স্বপন বড়ুয়া চৌধুরী। অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচোক ছিলেন চট্রগ্রামের আনোয়ারা তিশরী বেনুবন বৌদ্ধ বিহার এর অধ্যক্ষ ভদন্ত ধর্মানন্দ মহাস্থবির।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী নাজিব হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি রাসেল মিয়া, বেনাপোল চেকপোষ্ট ইমিগ্রেশন ওসি ইমতিয়াজ আহসান ও বেনাপোল প্রেসক্লাবের সভাপতি বকুল মাহাবুব প্রমূখ।
এছাড়াও বৌদ্ধ সদস্য তপন কুমার বড়ুয়া, দীপেন বড়ুয়া, লাবনী বড়ুয়া ও অসীম চৌধুরী বক্তব্য রাখেন। ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান শেষে বেনাপোল ইমিগ্রেশন দিয়ে তীর্থ যাত্রী হিসাবে ভারতে গমন করেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা বৌদ্ধরা।
চট্রগ্রামের বিশিষ্ট শিল্পপতি স্বপন বড়ুয়া চৌধুরী নিজ নামে বেনাপোলে বৌদ্ধবিহার প্রতিষ্ঠা করেন। সব ধর্মের মানুষের বিশ্রাম থাকা খাওয়াসহ বিভিন্ন ধরনের সেবা এ বৌদ্ধ বিহার থেকে দেওয়া হয় বলে জানান বৌদ্ধবিহারের প্রতিষ্টাতা। দক্ষিনবঙ্গে প্রথম বৌদ্ধ বিহার এটি। বেনাপোলে তিন বছর যাবত অনুষ্টিত হচ্ছে বৌদ্ধদের বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে চীবর দানসহ দেশ জাতি ও মানব কল্যানে ধর্মীয় বিশ্বাসে অসম্প্রদায়িক চেতনায় দেশের মানুষের কল্যান কামনা করা হয়।
বৌদ্ধ শাস্ত্র মতে, প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে ভগবান গৌতম বুদ্ধের জীবদ্দশায় এই ধর্মীয় আচার প্রবর্তিত হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সূতা কাটা শুরু করে কাপড় বয়ন, সেলাই ও রঙ করাসহ যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের দান করা হয়ে থাকে বলে একে কঠিন চীবর দান হিসেবে অভিহিত করা হয়। তিন মাস বর্ষাবাস শেষে শুভ কঠিন চীবর দান বৌদ্ধদের জাতীয় জীবনে উৎসবমুখর পরিবেশের পাশাপাশি এক মহান ধর্মীয় অনুভূতির সৃষ্টি করে। উৎসবের বর্ণাঢ্যতায় কঠিন চীবর দান বাংলাদেশ তথা সমগ্র বিশ্বের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব।