কেডিএ’র কাছ থেকে প্লটক্রয় করে বিপাকে ঝুমুর বেগম, কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা।

 প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২০, ০৯:২৬ পূর্বাহ্ন   |   আইন-বিচার


খুলনা ব্যুরো প্রধান জিয়াউল ইসলামঃ

ফুলবাড়ীগেট-তেলিগাতী সড়কের পাশে তেলিগাতীতে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের(কেডিএ) কাছ থেকে বাণিজ্যিক  প্লটক্রয় করে সম্পুন্ন আইনী প্রক্রিয়ায় ভবন নির্মাণ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে প্লট গ্রহীতা ঝুমুর বেগম। বরাদ্ধকৃত প্লটে বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ আইন বহিভূতভাবে পার্শ্ববর্তী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ মেহেদী হাসান তার ষ্টাফ এবং বহিরাগতদের নিয়ে জোরপূর্বক বন্ধ করে দিয়েছে। নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েও তিনি ক্ষান্ত হয়নি উল্টো ঝুমুর বেগমের বিরুদ্ধে তিনি এবং অভ্যান্তরের দুটি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে থানায় জিডি করেছেন। জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা বলছে ঝুমুর বেগমের ভবন নির্মাণ কাজে বাধা প্রদান করা সম্পুন্ন আইন বহিরভূত।

খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ তেলিগাতী সড়কের পাশ্বস্থ  বাণিজ্যিক কাম আবাসিক প্লট বরাদ্ধের জন্য ২০১৭ সালে টেন্ডার আহবান করে। টেন্ডারে অংশগ্রহন করে ঝুমুর বেগম(২৫) বাণিজ্যিক প্লটের ১১ ও ১২নং প্লট দুটি  রেজি. দলিল মূল্যে বরাদ্ধ পান। বরাদ্ধ পাওয়ার পর চলতি বছর মার্চের ২৭ তারিখ প্লটটিতে বহুতল ভবণ নির্মাণের কাজ শুরু করেন। প্লটের পাশ^বর্তি প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মো. মেহেদী হাসান সম্পুন্ন বেআইনি ভাবে ভবণ নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন। তিনি ৮ জুলাই প্রতিষ্ঠানে কেডিএ’র বরাদ্দকৃত প্লটে কাজ বন্ধ করে স্থাপনা নির্মাণ প্রতিরোধে মতবিনিময় সভা করেন। সভায় কেডিএ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অবস্থান না নিয়ে উল্টো প্লটগ্রহীতার বিরুদ্ধে থানায় জিডি, স্থাপনা নির্মাণ প্রতিরোধ কমিটি গঠন, করোনার মধ্যে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসুচি গ্রহন করা হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ মো. মেহেদী হাসান, ক্যাম্পাসের মধ্যে অবস্থিত খুলনা মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মো. রিয়াজ শরীফ, এবং ক্যাম্পাসের পিছনে অবস্থিত উদয়ন সরকারি প্রা. বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুলতানা নাজনিন একযোগে আড়ংঘাটা থানায় জিডি করেন। এ বিষয়ে জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই হরিদাস বলেন, টিটিসি’র গেটের সামনে ভবণ নির্মাণ এবং ভবন নির্মাণে বিদ্যুতের তার নিয়ে সৃষ্ট সমস্যায় থানায় তিনটি জিডি হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান ফটক বা মেইন গেট নয়, বন্ধ হয়ে যাওয়া গেটটি প্রতিষ্ঠানের দ্বিতীয় গেট যেটি ব্যবহার হতো না। কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে দেখাগেছে ঝুমুর বেগম কেডিএ’ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ক্রয় করে অনুমোদন নিয়ে ভবণ নির্মাণ কাজ করছিল। টিটিসি’র যে গেটটি নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে সেটার সরকারি কোন অনুমোদন নাই। প্রতিষ্ঠানের প্রধান ফটক যেটি অনুমোদিত সেটি চালু আছে। তিনি বলেন প্লটের মালিকের সাথে আলোচনা করে প্লটটি ক্রয় করে গেট ব্যবহার করতে পারে টিটিসি কর্তৃপক্ষ। বিদ্যুতের তার সরানোর বিষয়টি পিডিবি কর্তৃপক্ষের তাদের সাথে আলোচনা করে বিদ্যুতের তার সরিয়ে ভবণ নির্মাণ কাজে কোন বাধা নাই। ভবণ নির্মাণ কাজে বাধা প্রদান করলে আইন সম্মত হবেনা।

এ ব্যাপারে ঝুমুর বেগম বলেন, সম্পুন্ন আইনি প্রক্রিয়ায় প্লটটি ক্রয় করে কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয় করে প্লটে ভবন নির্মাণ কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন হুমকি ধামকি এবং বাধা প্রদান করে কাজ বন্ধ করে রাখায় আমি বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছি। আমাকে আমার সঠিক ক্ষতিপুরণ দিয়ে প্লটটি টিটিসি কর্তৃপক্ষ নিজেদের করে গেটটি ব্যবহার করলে আমার আপত্তি নাই। উল্লেখ্য কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ সম্পুন্ন অবৈধ ভাবে প্লটের ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ করে লাল নিশানা টানিয়ে দিলে প্লটের মালিক ঝুমুর বেগম সংশ্লিষ্ট থানায় সাধারণ ডায়রী করেছেন(যার নং-২৯৩, তাং ০৯/০৭/২০২০)। ঝুমুর বেগম বরাদ্ধকৃত সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের সং¯িøষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ ব্যাপারে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ মেহেদী হাসান বিষয়টি মূলত কেডিএ’র সাথে স্বীকার করে বলেন কেডিএ’র বরাবর কিছু প্রস্তাবনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর প্লটের মালিক যাতে আর ভবণ বৃদ্ধি করতে না করে সেজন্য মিটিং করে একটি রেজুলেশন করা হয়েছে। গেটের সামনের জমির প্লটটি কেন প্রতিষ্ঠান অধিকগ্রহন করে নেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহন করলো না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন আমাদেরকে বিষয়টি জানানো হয়নি তাছাড়া সার্কুলারের বিষয়টি আমরা জানিনা। কেডিএ যেহেতু প্লটটি লিস দিয়েছে সেক্ষেতে কেডিএ’র বিরুদ্ধে কোন সিদ্ধান্ত না নিয়ে সম্পুন্ন নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্লটটি ক্রয় করা ঝুমুর বেগমের কাজ বন্ধ করে দেওয়া সঠিক কিনা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ঝুমুর বেগম প্লট কিনে নিয়েছে বুঝি সবই প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে উভয়ের মধ্যস্থতায় সিদ্ধান্ত হবে। তিনি বলেন যেহেতু সরকারি প্রতিষ্ঠান আমাদের ঢাকার হেড অফিসে মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি জানানো হয়েছে আমরা সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।

আইন-বিচার এর আরও খবর: