যশোরে বোমা মেরে১৭ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় আটক-৫।

 প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০২০, ০১:১৫ পূর্বাহ্ন   |   অপরাধ


আব্দুল জব্বার, যশোর জেলা ব্যুরো প্রধানঃ

 যশোরের প্রকাশ্যে থানার পাশে জনবহুল এলাকায় বোমা ফাটিয়ে ১৭ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের আলোচিত ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে ২ লাখ ৪৮ হাজার ৫০০ টাকাসহ ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।


ছিনতাইয়ের ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ গ্রেপ্তার হলেও বাস্তবায়নকারীসহ আরো দুজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।


আটককৃতরা হলেন যশোর শহরের পুলিশ লাইনস টালিখোলা এলাকার শফি দারোগার বাড়ির ভাড়াটে ফরিদপুর জেলার মুনসুর মোল্লার ছেলে টিপু (২৪), শহরের বারান্দী মোল্লাপাড়া এলাকার রবিউল ইসলামের ছেলে সাঈদ ইসলাম ওরফে শুভ (২৪), ধর্মতলা হ্যাচারিপাড়া এলাকার রুহুল আমিনের ছেলে বিল্লাল হোসেন ওরফে ভাগনে বিল্লাল (২২), সিটি কলেজ এলাকার ব্যাটারিপট্টি এলাকার নিজাম উদ্দিনের ছেলে রায়হান (২৮) ও পূর্ব বারান্দী মালোপাড়ার মুফতি আলী হুসাইনের ছেলে ইমদাদুল হক (২১)।


টাকা লুটের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী টিপু এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী ‘জামাই’ রাজ্জাক ফকির এখনো গ্রেপ্তার হয়নি বলে জানান পুলিশ সুপার আশরাফ হোসেন।


বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) ভোর পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।


গত ২৯ সেপ্টেম্বর দিনদুপুরে থানার ১০০ গজের মধ্যে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের (ইউসিবিএল) সামনে বোমা ফাটিয়ে ১৭ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ সময় ছুরিকাঘাত ও বোমার আঘাতে টাকা বহনকারী দুজন আহত হন।


বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে চাঞ্চল্যকর এই ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন।


আশরাফ হোসেন বলেন, আরএন রোড এলাকার আগমনী মোটরসের মালিক ইকবাল হোসেনের পার্টস ও ফলের ব্যবসা রয়েছে। তার ভাই এনামুল হক ফলের আড়তের ১৭ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার জন্য যাচ্ছিলেন।

পুলিশ সুপার বলেন, এই আড়তে দীর্ঘদিন শ্রমিকের কাজ করত টিপু। মাঝেমধ্যেই এনামুলের মোটরসাইকেলে করে ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার বিষয়টি জানা ছিল তার। টিপুই এই টাকা লুটের পরিকল্পনা করে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য পাশের ফল ব্যবসায়ী রাজ্জাক ফকির ওরফে জামাই রাজ্জাককে সঙ্গে নেয়। জামাই রাজ্জাকই অন্য অপরাধীদের যুক্ত করে।


পুলিশ সুপার আরো বলেন, ঘটনার সময় টিপু রাস্তার বিপরীত পাশে থেকে টাকা বহনকারী এনামুলকে সঙ্গীদের চিনিয়ে দেয়। এরপর তারা ছুরিকাঘাত করে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে ককটেল ফাটিয়ে মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর গোয়েন্দা ও কোতোয়ালি থানার পুলিশ অপরাধীদের শনাক্ত করে। এরপর এদের আটকে পুলিশ অভিযান শুরু করে।


পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, বুধবার বিকেল থেকে বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত সদরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে আটক করা হয়। টাকা ভাগ-বাঁটোয়ারা হয়ে যাওয়ায় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ২ লাখ ৪৮ হাজার ৫০০ টাকা। এ ছাড়া ছিনতাইকালে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল, একটি স্কুলব্যাগ ও দুটি চাকু উদ্ধার করা হয়েছে।


ঘটনায় জড়িত প্রত্যেকেই হত্যা, ডাকাতি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন মামলার আসামি বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।


সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সালাউদ্দিন শিকদার, তৌহিদুল ইসলাম, গোলাম রব্বানী, কোতোয়ালি থানার ওসি মনিরুজ্জামান, ডিবির ওসি মারুফ আহম্মদ প্রমুখ।

অপরাধ এর আরও খবর: