গোপালগঞ্জে বর্ণি ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এবার অনাস্থা প্রস্তাব দিলেন ৯ ইউপি সদস্য

 প্রকাশ: ১৮ অগাস্ট ২০২১, ০২:১৯ পূর্বাহ্ন   |   গোপালগঞ্জ জেলা


কে এম সাইফুর রহমান,গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিঃ


গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার ২নং বর্ণি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শফিকুল ইসলাম বাদশা'র বিরুদ্ধে একই পরিষদের ৯ ইউপি সদস্য অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছেন। 


দুস্থদের চাল আত্মসাৎ সহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছেন বর্ণি ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ মনির সিকদার, ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ শরিফুল ইসলাম, ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য নাজমুল হুসাইন নাজিম, ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ মনোয়ার হোসেন, ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ আহাদ শেখ, ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য গোলাম রসুল, ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য আমির হামজা, সংরক্ষিত ১নং (১, ২ ও ৩) ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য আলেয়া বেগম এবং সংরক্ষিত ৩নং (৭, ৮ ও ৯) ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য তাপসী বেগম।


এর আগে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে বর্ণি ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ শরিফুল ইসলাম সহ অন্যান্য ইউপি সদস্যগণ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। যা বর্তমানে তদন্তনাধীন রয়েছে। 


লিখিত অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষরকারী ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ শরিফুল ইসলাম বলেন, দুস্থদের ভিজিডি কার্ডের চাল আত্মসাৎ সহ সীমাহীন দুর্নীতি ও অনিয়মে আমরা ইউপি সদস্যরা রীতিমতো অতিষ্ঠ ও বিব্রত। চেয়ারম্যান গত ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের জানুয়ারি হতে জুন পর্যন্ত ৬ মাসে মোট ২ হাজার ৫ শত ২০ কেজি দুস্থদের ভিজিডি কার্ডের চাল আত্মসাত করেন। 


ইউনিয়ন পরিষদের বকেয়া ট্যাক্স বাবদ জনগণের নিকট থেকে টাকা উত্তোলন করে তাদের কাছে ভুয়া ট্যাক্সের রশিদ দিয়ে ২ লক্ষ ১৪ হাজার ৪ শত টাকা আত্মসাৎ করেন।


চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বাদশা গত ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে এলজিএসপি-৩ প্রকল্পের আওতায় ইউনিয়নের জন্য একটি ল্যাপটপ ক্রয় বাবদ ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন।


এছাড়া গৃহহীনদের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা'র দেওয়া বরাদ্দের ঘর বণ্টনে ব্যাপক অনিয়ম করেছেন তিনি। চেয়ারম্যানের আপন চাচা নূর ইসলাম মুন্সীর টিনের ঘর থাকা সত্ত্বেও তিনি স্বজনপ্রীতি করে তাকে গরীবের ঘর দিয়েছেন তিনি। 

এ ধরনের দুর্নীতিবাজ ও অর্থ আত্মসাৎকারী চেয়ারম্যানের সাথে কাজ করলে আমরা এবং আমাদের পরিষদ কলুষিত হবে। তাই আমরা সকলে নিরুপায় হয়ে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম হেদায়েতুল ইসলাম স্যারের বরাবর লিখিত অনাস্থা প্রস্তাব দিয়ে পাঠিয়েছি।


এ বিষয়ে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ২নং বর্ণি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শফিকুল ইসলাম বাদশা তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আগামী ইউপি নির্বাচনে দল থেকে যাতে  আমি মনোনয়ন না পাই সে কারণে প্রতিপক্ষ চেয়ারম্যান প্রার্থী দলের কাছে আমার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে পরিষদের ইউপি সদস্যদের ভুল বুঝিয়ে আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছেন।


মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) বিকালে  টুঙ্গিপড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম হেদায়েতুল ইসলামের সাথে বর্ণি ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৯ ইউপি সদস্যের স্বাক্ষরিত অনাস্থা পত্রের কপি হাতে পেয়েছি।

দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্তে সত্যতা পেলে সরকারি বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গোপালগঞ্জ জেলা এর আরও খবর: