টুঙ্গিপাড়ায় প্রায় ৯শ পুকুরের মাছ ভেসে গেছে মাথায় হাত মৎস্যচাষিদের।

 প্রকাশ: ২৭ অগাস্ট ২০২০, ০২:৩৮ পূর্বাহ্ন   |   গোপালগঞ্জ জেলা


গোপালগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ

  গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় অতিবৃষ্টি ও নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে ভেসে গেছে  ৮শ ৮৮টি পুকুরের মাছ। এতে উপজেলার  মৎস্য সেক্টরে অন্তত ৬ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ বছরও বেশি লাভের আশায় নিজের পুঁজি বিনিয়োগের পাশাপাশি ব্যাংক, এনজিও এবং মহাজনের কাছ থেকে ধারদেনা করে মাছ চাষ করেছিলেন বলে জানান মৎস্যচাষিরা। 

পুকুর ও ঘেরে মাছও বেশ ভাল বেড়ে উঠেছিল। কিন্তু প্লাবন ও অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে পুকুর ও ঘেরের মাছ ভেসে গিয়ে কৃষকের কোমড় ভেঙে গেছে। ধার দেনার টাকা পরিশোধ নিয়ে মৎস্যচাষিরা মহা অনিশ্চিয়তায় পড়েছেন। মাছ হারিয়ে তারা চোখে মুখে অন্ধকার দেখছেন। 

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, টুঙ্গিপাড়ায় ৩১৮.৮৪ হেক্টর পুকুর ও ঘেরে ৫২৪ মৎস্যচাষি  মাছের চাষ করেন। এসব পুকুরে গ্রাসকার্প, রুই, কাতলা, মৃগেল, সরপুঁটি, সিলভার কার্প, চিংড়ি ও বাটা মাছ চাষ করেছিলেন মৎস্যচাষিরা। বন্যায় এসব পুকুর ও ঘের থেকে ৩৮৫ মেট্রিক টন মাছ ও সাড়ে ৪ লাখ মাছের পোনা ভেসে গেছে। এছাড়া পুকুর, ঘেরের পার ও অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে।

টুঙ্গিপাড়ার মৎস্যচাষি অমৃত মণ্ডল, নরেশ মণ্ডল, বিকাশ বাড়ইসহ একাধিক মৎস্যচাষি এ প্রতিবেদককে বলেন, নিজেদের পুঁজি বিনিয়োগের পাশাপাশি মহাজনের কাছ থেকে দাদন, ব্যাংক ও এনজিওর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে লাভজনক মাছ চাষ করেছিলাম। নদীর পানি বেড়ে আমাদের ঘেরের সব মাছ ভেসে গেছে। ধারদেনা পরিশোধের দুশ্চিন্তায় আমরা চোখে মুখে অন্ধকার দেখছি। তাই সরকার আমাদের সহযোগিতা না করলে ঘুরে দাঁড়াতে পারবো না।

চাপরাইল গ্রামের মৎস্যচাষি সুব্রত বাইন বলেন, ২ একর ৪০ শতাংশের দুইটি ঘেরে সব পুঁজি খাটিয়ে রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলভার কার্প, পুটি ও বাটা মাছের চাষ করেছিলাম। কিন্তু প্লাবিত হয়ে দু’ঘেরের সব মাছ ভেসে গেছে। এতে আমার প্রায় ৪ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখন নিঃস্ব হয়ে পড়েছি।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গোপালপুর গ্রামের মৎস্যচাষি সুমন্ত মণ্ডল বলেন, ৬৪ শতাংশের পুকুরে মাছের চাষ করেছিলাম। কিন্তু নদীর পানিতে প্লাবিত হয়ে আমার পুকুরের সব মাছ ভেসে গেছে। এতে আমার প্রায় এক লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষতি কিভাবে কাটিয়ে উঠতে পারব সে চিন্তায় আমি দিশেহারা।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা দেবাশীষ বাছাড় প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, উপজেলায় মৎস্য সেক্টরে ৬ কোটি টাকার ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির তালিকা মৎস্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া বন্যা পরবর্তীতে করণীয় নিয়ে মৎসচাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া

গোপালগঞ্জ জেলা এর আরও খবর: