গোপালগঞ্জ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটি টাকার আসবাবপত্র নষ্ট হচ্ছে।

গোপালগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
প্রয়োজন নেই তবুও বেশি দামে কেনা হয়েছিল আসবাবপত্র। সেগুলো এখন গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের (বশেমুরবিপ্রবি) খোলা আকাশের নীচে পড়ে আছে। অযত্ন আর অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে এসব আসবাবপত্র ।
বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের সময়ে কেনা এসকল আসবাবপত্রের মধ্যে প্রায় ৮০০টি স্টিলের চৌকি দীর্ঘদিন ধরে খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকায় ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে ২০১৭ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত সময়ে নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড ও খুলনা শিপইয়ার্ড থেকে ১১টি ওয়ার্ক অর্ডারের মাধ্যমে মোট ৪ কোটি ৪৮ লাখ ২৭ হাজার ৬২৫ টাকা মূল্যের ২ হাজার ৬৭০টি স্টিলের চৌকি ক্রয় করা হয়েছিল। এতে প্রতিটি চৌকির গড় মূল্য পড়ে প্রায় ১৬ হাজার ৭৮৯ টাকা। কিন্তু বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসকল স্টিলের চৌকি সর্বোচ্চ ৮ থেকে ৯ হাজার টাকায় পাওয়া যায়। এদিকে ঐ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত হলগুলোর জন্য প্রয়োজন ছিল এক থেকে দেড় হাজার স্টিলের চৌকি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রয়োজনের অতিরিক্ত আসবাবপত্র ক্রয় করায় এবং সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না থাকাতে স্টিল নির্মিত এসকল আসবাবপত্র নষ্ট হচ্ছে।
তৎকালীন প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ড. এম. এ. সাত্তার বলেন, ‘সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের নির্দেশেই এসকল ওয়ার্ক অর্ডার প্রদান করেছিলাম। এমনকি পরবর্তীতে আমাকে ওয়ার্ক অর্ডারের জন্য অগ্রিম অর্থ প্রদানেরও নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু আমি অগ্রিম অর্থ প্রদান করতে রাজি হইনি এবং প্রকল্প পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করি।’
আসবাবপত্র সংরক্ষণের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টোরের দায়িত্বে থাকা মো. সাইফুল্লাহ বলেন, ‘স্টোরের জায়গা বৃদ্ধির জন্য প্রশাসনকে গত দু’বছরে প্রায় পাঁচবার চিঠি প্রদান করেছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, ইতিমধ্যে আমরা কাঠের বেঞ্চ, চেয়ার, টেবিলগুলো সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। তবে এখনও স্টোরের জায়গা পর্যাপ্ত নয়। স্টোরের জায়গা বাড়ানো হলে অবশিষ্ট আসবাবপত্র সঠিকভাবে সংরক্ষণ সম্ভব হবে।’
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. কিউ. এম. মাহবুব বলেন, ‘এগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোপার্টি, জনগণের প্রোপার্টি, দেশের প্রোপার্টি। এগুলো এভাবে নষ্ট হতে দেখে আমি অত্যন্ত মনঃক্ষুণ্ন। কিন্তু এ বিষয়ে আমি একা কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারি না। রিজেন্ট বোর্ডে আলোচনার মাধ্যমে এসকল আসবাবপত্রের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’